রফিক মাহমুদ,সিবিএন:
মিয়ানমারের অারকান রাজ্য থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে অাশ্রয় নেওয়া প্রায় ১২লাখ রোহিঙ্গা শরর্ণাথীর কমপক্ষে ৮৭ শতাংশই ভাসারচরের নিরাপদ শিবিরে যেতে আগ্রহী নন এমনই একটি তথ্য উঠে এসেছে তুরস্ক ভিত্তিক গণমাধ্যম আনাদলু এজেন্সির
জরিপে। এই তথ্যে জানা গেছে শতকরা ৮৭শতাংশ রোহিঙ্গা ভাসানচরে যেতে অনাগ্রহী বলে নিশ্চিত করেছে ।

গত বছরের অাগস্ট মাসে মিয়ানমার সরকার ও সেদেশের সেনাবাহিনীর গণহত্যা, নিযার্তন, অগ্নিসংযোগ, হামলা ও গণ ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচতে প্রায় ৭ লাখের অধিক রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে অাশ্রয় নিয়ে তাড়াহুড়ো করে বানানো শিবিরে নিরাপদে রয়েছে। তারা সহজে এই অাশ্রয় শিবির ত্যাগ করে নিরাপদ অাশ্রয়স্থল বঙ্গোপসাগরের দ্বীপ ভাসানচরে যেতে চাইনা। রোহিঙ্গাদের মানবিকদিক বিবেচনা করে অাল্পসংখ্যক রোহিঙ্গা ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু সরকারের এই সিদান্তের প্রতি অাগ্রহ নেই রোহিঙ্গাদের বড় একটি অংশের।

পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ কক্সবাজার শাখা এই নিয়ে একটি জরিপও চালিয়েছে। প্রায় ১২ লক্ষাধিক শরণার্থীর আশ্রয়স্থল কক্সবাজার জেলা। এর মধ্যে সাড়ে ৭ লক্ষাধিক শরণার্থী গত বছরের ২৫ আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলা সেনা অভিযানের পর বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জরিপটিকে উদ্ধৃত করে আনাদলু জানিয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা এই দূরবর্তী দ্বীপে ভবিষ্যৎ ত্রাণ ও ঔষধ সরবরাহ নিয়ে শঙ্কিত। এছাড়াও আত্মীয়স্বজন থেকে আলাদা হওয়াসহ মোট ১০টি কারণে তারা যেতে অনাগ্রহী।

বাংলাদেশের ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয় এর শরণার্থী দপ্তরের প্রধান মোহাম্মদ হাবিবুল কবির চৌধুরী আনাদলু এজেন্সিকে বলেছেন, ‘এই বিষয়ে সম্পৃক্ত সকল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করবে সরকার। এর মধ্যে রয়েছেন রোহিঙ্গা প্রতিনিধি, স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার সদস্য ও অধিকার গোষ্ঠীর সদস্যরা। তাদের ভাসানচরে সত্যিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে নিয়ে যাওয়া হবে।’ তিনি বর্তমান শিবিরগুলো সম্পর্কে বলেন, ‘স্থানান্তর ততক্ষণ পর্যন্ত হবে না যতক্ষণ না উখিয়া-টেকনাফের শিবিরগুলোর চাইতে ভাসানচরে উন্নত অবস্থা নিশ্চিত না হবে।’

এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বাংলাদেশ বড় রকমের পরিবেশ সংকটে পড়েছে। তিনি জানান, রোহিঙ্গারা হাজার পাহাড় কেটে ফেলেছে, কয়েক হাজার একর বন উজাড় করে দিয়েছে এবং স্থানীয় মানুষও অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে জর্জারিত হয়ে পড়েছে।

‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সকল সমস্যা ও মানবাধিকারের বিষয় চিন্তা করেই সরকার এই বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে’ এমটি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবর্সন কমিশনের কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম অাজাদ।